কাশীপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক গফুর। তার মেয়ের সাথে সে কোনরকমে একটি জীর্ণ ঘরে দিন গুজরান করে। তার পরিবারের সদস্য বলতে তারা দুই জন আর মহেশ। সে যে গ্রামে থাকে, সে গ্রামের জমিদার শিববাবু ও তার পণ্ডিত তর্করত্ন তাকে গরুর প্রতি অবহেলার দায়ে অভিযুক্ত করে। তারা গো শব্দের শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা করে গফুরকে বোঝালেও নিজেরা গরুকে খাওয়ার জন্য খড় দিতে অস্বীকার করে। টাকার লোভে গ্রামে গরু চরে বেড়ানোর একমাত্র মাঠ বিক্রি করে দেয়। গল্পের শেষে একটি ঘটনায় মেজাজ হারিয়ে গফুর তার মহেশকে লাঙলের ফলা দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলে, যে মহেশকে সে তার ‘ছেলে’ বলে অভিহিত করেছিল। এরপর সে গ্রামে থাকা সবকিছু ফেলে ফুলবেড়ের চটকলে কাজ করতে চলে যায়। সে যাবার পথে উপরওয়ালার কাছে যারা মহেশের খাবার ঘাস কেড়ে নিয়েছে, খাবার পানি কেড়ে নিয়েছে, তাদের কসুর মাফ না করার ফরিয়াদ জানায়।
ভূপেন হাজারিকা মহেশ” গল্প অবলম্বে গান রচনা করেছে।
শরৎ বাবু
খোলা চিঠি দিলাম তোমার কাছে
তোমার গফুর মহেষ এখন
কোথায় কেমন আছে
তুমি জানো না
হারিয়ে গেছে কোথায় কখন
তোমার আমিনা
শরৎ বাবু এ চিঠি পাবে কিনা
জানি না আমি
এ চিঠি পাবে কিনা জানি না
গেল বছর বন্যা হলো
এ বছরে খরা
খেতে ফসল ভাসিয়ে নিলো
মাঠ শুকিয়ে মরা
এক মুঠো ঘাস পায় না মহেষ
দুঃখ ঘোচে না
তুমি জানো না
শরৎ বাবু এ চিঠি পাবে কিনা
জানি না আমি
এ চিঠি পাবে কিনা জানি না
বর্গিরা আর দেয় না হানা
নেই তো জমিদার
তবু কেন এদেশ জুড়ে
নিত্য হাহাকার
জেনেছো দেশ তো স্বাধীন
আছে ওরা বেশ
তোমার গফুর আমিনা আর
তোমারই মহেষ
এক মুঠো ভাত পায় না খেতে
গফুর আমিনা
তুমি জানো না
শরৎ বাবু এ চিঠি পাবে কিনা
জানি না আমি
এ চিঠি পাবে কিনা জানি না
শরৎ বাবু
——————————– ভূপেন হাজারিকা