চট্টগ্রাম শহরে পরিবহন সেক্টরে বর্তমানে ১৫ হাজারেরও বেশী শিশু ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমের সাথে যুক্ত। দৈবচয়ন পদ্ধতিতে ৩৩৮জন শিশুর উপর উন্নয়ন সংস্থা ঘাসফুলের গবেষণা জরিপের প্রাপ্ত ফলাফলে ১৫% শতাংশ শিশু বিকল্প ড্রাইভার এবং ৫৭% শিশু হেলপারকাম ড্রাইভার হিসেবে সড়ক পরিবহনে অবৈধভাবে কাজ করছে। পরিবহন সেক্টরে শ্রমের সাথে যুক্ত শিশুদের শারিরিক নির্যাতনের শিকার ৯১%, যৌন নির্যাতনের শিকার হয় ১৩%।
পরিবারের দারিদ্রতার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত হয়েছে ৯০% শিশু। কোভিড মহামারীর কারণে শহর থেকে গ্রামে স্থানান্তর হয়েছে ৩৭% শিশুর পরিবার। সমতা ভিত্তিক সমাজগঠনই শিশুশ্রম মুক্তির একমাত্র পথ। পরিবহন সেক্টরে বৈধ লাইসেন্স ও নিয়োগপত্র নিশ্চিত করলেই শিশুশ্রম প্রতিরোধ সম্ভব । দারিদ্র্যতার কারণে শিশুরা শ্রমের সাথে যুক্ত হচ্ছে, যুক্ত হওয়া শিশুদের সুরক্ষা করে বিকল্প ঝুঁকিহীন কাজের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। মহামারী করোনাভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমণের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ক্ষতির পাশাপাশি শিশুর শারিরিক ও মানসিক বিকাশ মারাত্মক আকারে বাধাগ্রস্ত হয়েছে । পরিবারে খাদ্য সংকটের কারণে শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগছে। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। শিক্ষার যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নেয়া কঠিন। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বেড়েছে বাল্যবিয়ে, শিশুশ্রম ও শিশুপাচার। বাল্যবিয়ে শুধুমাত্র কন্যাশিশু নয় ছেলে শিশুদের মাঝেও বেড়েছে গবেষক ও সমাজবিজ্ঞানী ড. মনজুর-উল-আমিন চৌধুরী’র মাঠ পর্যায়ে গবেষণার ফলাফলে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
অদ্য ৩১মার্চ ২০২২, বৃহস্পতিবার সকাল ১১.০০ টায় ব্র্যাক লার্নিং সেন্টার চট্টগ্রাম সম্মেলন কক্ষে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ঘাসফুলের আয়োজনে ‘‘শিশু পরিস্থিতি চট্টগ্রাম : ঝুঁকিপূর্ণ পরিবহন সেক্টর’’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনানুষ্ঠান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম-সচিব প্রফেসর ড. জয়নাব বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় । অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. এ. এফ. ইমাম আলি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-অতিরিক্ত ডিআইজি (টুরিস্ট পুলিশ) চট্টগ্রাম বিভাগ, মোহাম্মদ মোসলিম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন-ঘাসফুলের সিইও আফতাবুর রহমান জাফরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঘাসফুল শিশু সুরক্ষা কর্মসূচির সমন্বয়কারী সিরাজুল ইসলাম।
উপস্থাপিত গবেষণা তথ্য উপাত্ত্ব’র উপর আলোচনায় অংশ নেন ব্র্যাকের বিভাগীয় প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম মজুমদার, যুগান্তর সমাজ উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক, সাঈদুল আরেফীন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর’র সহকারী অধ্যাপক মারজিয়া খাতান স্মিতা, ঘাসফুল পরাণ রহমান স্কুলের অধ্যক্ষ মাহমুদা আকতার, স্বপ্নীল ব্র্যাইট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ,মোহাম্মদ আলী শিকদার, পূর্বার নির্বাহী প্রধান ইন্জিয়ার শান্তুনু চৌধুরী বিজয়, নাট্যজন জোবায়দুর রশীদ,মাইশার নির্বাহী পরিচালক ইয়াছিন মন্জু, কারিতাস বাংলাদেশের প্রোগ্রাম অফিসার এমদাদুল ইসলাম, ওয়ার্ড পর্যায়ের শিশু সুরক্ষা কমিটির সভাপতি সাধন সিংহ, পুষ্টিবিদ হাসিনা আকতার লিপি, জাতীয় শ্রমিকলীগ চট্টগ্রাম মহানগর এর সভাপতি বখতেয়ার উদ্দিন খাঁন, আলোকিত গামের্ন্ট শ্রমিক ফেডারেশন’র কেন্দ্রীয় সভাপতি বাপ্পীদেব বর্মণ, সংশপ্তকের উপ-পরিচালক অগ্রদূৎদাশ গুপ্ত, পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি দিলীপ সরকার, শিশু প্রতিনিধি মো: সাকিব ,কিশোরী দলের সভাপতি আয়েশা আকতার, অপারজেয় বাংলাদেশের প্রতিনিধি জিনাত আরা বেগম, প্রমূখ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঘাসফুলের উপ-পরিচালক মফিজুর রহমান, সহকারী পরিচালক সাদিয়া রহমান,সহকারী ব্যবস্থাপক জেসমিন আকতার, কর্মকর্তা আবদুর রহমান,সুপারভাইজার,বিদ্যুৎ কান্তি দেব, গুলশানারা, ইমরানা নাসরিন ,জোবায়দা গুলশান আরা, মো: নাজিম উদ্দিন, মোহাম্মদ আলী,নুরুল আজিম,তন্ময় বড়ুয়াসহ সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা ।
জেসমিন বাপ্পি
চট্টগ্রাম