চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন আগামী ৭ জুলাই। এই উপলক্ষে গত ৫ জুলাই চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের আব্দুল খালেক মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। উক্ত সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মা ও শিশু হাসপাতালের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ডাক্তার এম এ তাহের খান, ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মোঃ জাবেদ আবছার চৌধুরী, অনকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার শেফতুজ্জাহান ও হেমাটোলজি ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার সামিরা তৌফিক রেশমা।
মা ও শিশু হাসপাতালের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ডাক্তার এম এ তাহের খান লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে অনকোলজি এবং হেমাটোলজি ডিপার্টমেন্ট এর তত্ত্বাবধানে একটি আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন আগামী ৭ জুলাই করতে যাচ্ছি আমরা। আমি খুবই আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমাদের এই আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী জনাব মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল উপস্থিত থাকবেন। এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে যেহেতু আমাদের হাসপাতালে ক্যানসার ইনস্টিটিউটের কাজ চলছে এবং আগামী বছর পহেলা জুলাই থেকে পূর্ণাঙ্গ ভাবে ক্যানসার ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম শুরু হয়ে যাব। তাই পুরো ইনস্টিটিউট চালানো এবং তত্ত্বাবধান জন্য এই বৈজ্ঞানিক সম্মেলন করা হচ্ছে। এই সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা পুরো চট্টগ্রাম বাসীকে জানাতে চাই ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য আমাদেরকে আর চট্টগ্রামের বাহিরে যেতে হবে না। আমাদের ক্যান্সার ইনস্টিটিউট ১০০ শয্যা বিশিষ্ট এবং প্রায় ৫৫০০০ বর্গফুট আয়তনের। ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০০০ এর বেশি ক্যান্সারের রোগীকে আমারা চিকিৎসা সেবা দিয়ে এসেছি। শুধুমাত্র ক্যানসারের চিকিৎসাই নয় ক্যান্সার রিসার্চ নিয়েও আমরা কাজ করছি।
গত ২০২১ সালে আমাদের চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের অনকোলজি ও রেডিওথেরাপি বিভাগে মোট আউটডোর রোগীর সংখ্যা ছিলো ১৫৩৬ জন। ভর্তি রোগী ছিলো ৫৪৬ জন এবং কেমোথেরাপি পেয়েছে মোট ১৪৮৬ জন।
হেমোটোলজি বিভাগে মোট আউটডোর রোগী ছিলো ২০৯৮ জন, ভর্তি রোগী ছিলো ২৫০ জন এবং ডে কেয়ার সার্ভিস পেয়েছে ১৩৪৫ জন। আমাদের ইনস্টিটিউটে রেডিওথেরাপি, কেমথেরাপি, প্যালিয়েটিভ কেয়ার, পেডিয়াট্রিক অনকোলজি, হেমাটোলজি, অ্যাডাল্ট অনকোলজি সহ সকল বিভাগ বর্তমান থাকবে, এবং তার সাথে নিউক্লিয়ার মেডিসিন এর সবকিছু থাকবে এবং সেই সাথে নিউক্লিয়ার মেডিসিন ইনভেস্টিগেশনের সবকিছু থাকবে।
দুটি রেডিওথেরাপি মেশিন বসানোর জন্য দুটি বাংকারের কাজ শেষ পর্যায়ে। এই পুরো প্রজেক্টটি করতে আমাদের ১২০ কোটি টাকা খরচ হবে। ১২০ কোটি টাকার এই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে আমি চট্টগ্রামবাসীর সহায়তা ও সহযোগিতা কামনা করছি। ইতিমধ্যে আমাদের ক্যানসার ইনস্টিটিউটের জন্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ মাননীয় মন্ত্রী (ভূমি মন্ত্রণালয়) ইউসিবি ব্যাংক থেকে পাঁচ কোটি টাকা দিয়েছেন এবং ক্যানসার ইনস্টিটিউটের প্রকল্প করার জন্য যে জায়গা প্রয়োজন তা তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী থেকে ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
ক্যান্সার বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান দৈনিক আজাদীর সম্পাদক জনাব এম এ মালেক, সাবেক লায়ন গভর্নর রূপম কিশোর বড়ুয়া এবং ভি আই পি টাওয়ারের সত্ত্বাধিকারী জনাব আবুল হোসেন এই প্রকল্পে এক কোটি টাকা করে আনুদান দিয়েছেন। এভাবে চট্টগ্রামের আরো অনেক মহৎ প্রাণ ব্যক্তি আমাদের ক্যানসার ইনস্টিটিউটের জন্য অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে এই ক্যান্সার হাসপাতাল পরিপূর্ণ ভাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আপনাদের সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।