প্রমত্ত পদ্মায় আজ চোখ জুড়ে যায়। পদ্মা সেতুর অপরূপ নির্মাণশৈলী আর পদ্মা নদীর অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আজ মিলেমিশে একাকার। সেই সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলল একঝাঁক শিশু কিশোর তাদের আকা ছবিতে। রং ও তুলির পরশে পদ্মা সেতু ও নদী বিমূর্ত হয়ে উঠল চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত শিশু কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায়।
২৪ জুলাই রবিবার বিকেল ৪টা থেকে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির আর্ট গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত পদ্মা উৎসবের প্রথম পর্ব ছিল পদ্মা সেতু নিয়ে শিশু কিশোরদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা। উন্মুক্ত এই প্রতিযোগিতায় ছিল ১ম থেকে ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক বিভাগ এবং ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিয়ে ছিল খ বিভাগ। প্রায় দুই শতাধিক প্রতিযোগী অংশ নেয়। বিজয়ী ও অংশগ্রহনকারী সবাইকে পুরষ্কার ও প্রশংসাপত্র দিয়ে উৎসাহিত করা হয়। অনুষ্ঠানে আসা শিশু কিশোরদের অবিভাবকদের অনেকে তাঁদের অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে দেশের এই প্রথম চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা দেখে আমরা অভিভূত। আমাদের সন্তানরাও খুব আগ্রহ, আনন্দ উদ্দীপনার সাথে অংশ নিয়েছে।
শাহাদাত হোসেন নামে এক প্রতিযোগির পিতা বলেন, প্রতিযোগিতায় পুরষ্কার পাওয়া বড় বিষয় নয়, অংশগ্রহণই বড় বিষয়। পদ্মা সেতু নিয়ে এই ধরনের একটি নতুন বিষয় শিশু কিশোরদের বেশী আকৃষ্ট করেছে। তাছাড়া পদ্মা সেতু এখন আমাদের জাতীয় জীবনে বড় গৌরবের বিষয়। জলি আক্তার নামে এক প্রতিযোগির মা বলেন, আজ পদ্মা নদী পাড় হই পদ্মা সেতু দিয়ে। তখন চোখ জুড়ে যায় ও আনন্দ মন ভরে উঠে । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অদম্য কর্ম স্পৃহা ও সাহসীকতায় নির্মিত পদ্মা সেতু আজ নিরেট বাস্তবতা । এই পদ্মাসেতু বিশ্বে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে সম্মান ও মর্যাদার এক অনন্য উচ্চতায় । বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ অবকাঠামোর একটি বড় উন্নয়ন মাইলফলক । এই ঐতিহাসিক অর্জনকে শিশু কিশোররা তাদের রং তুলিতে ফুটিয়ে তুলেছে। এটা তাদের চিন্তা চেতনা, সৃজনশীলতা ও মননশীলতায় গভীর রেখাপাত করবে। আমি এই অসাধারণ উদ্যোগের জন্য আয়োজক কমিউনিটি স্টুডিও ও গৌরী ললিতকলা একাডেমিকে সাধুবাদ জানাই।
উল্লেখ্য, কমিউনিটি স্টুডিও ও গৌরী ললিতকলা একাডেমির উদ্যোগে আয়োজিত পদ্মা উৎসবে শিশু কিশোরদের জন্য ছিল চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পদ্মার গান, কবিতা ও নৃত্য। পদ্মা উৎসবের একটি বিশেষ পর্ব ছিল পদ্মার ইলিশ রেসিপি প্রদর্শনী। এতে চট্টগ্রামের রন্ধন শিল্পীরা ইলিশ নিয়ে রান্নার বিভিন্ন রেসিপি প্রদর্শন করেন।
এসময় আগত অতিথিদের স্বাগত জানান কমিউনিটি স্টুডিওর স্টার্টআপ পরিচালক সরোয়ার আমিন বাবু ও গৌরী ললিতকলা একাডেমির পরিচালক সূপর্না বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের প্রচার সম্পাদক আলীউর রহমান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মোঃ সাজ্জাদ উদ্দিন, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের লেবার উপ-কমিটির যুগ্ন আহবায়ক সৈয়দ খুরশিদ আলম, অধ্যাপক মনোজ কুমার দেব, অধ্যাপক প্রদীপ কুমার দাশ, বিশিষ্ট সংগীত সাধক নজরুল ইসলাম মানিক, আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মামুন চৌধুরী, কণ্ঠশিল্পী অনামিকা তালুকদার, শীলা চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান জাহাঙ্গীর, বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পী দিলরুবা খানম। অনুষ্ঠান সমন্বয়ে ছিলেন রিকন বড়ুয়া, ওসমান জাহাঙ্গীর, নিজাম উদ্দিন গোফরান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সূপর্না বড়ুয়া ও সাবরিনা সাবা।
পদ্মা উৎসবের এই পুরো অনুষ্ঠানে সহযোগিতায় ছিল গোল্ডেন ইস্পাত, এইচ এম স্টিল ও পিউরিয়া ফুড।