চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমাবেশে শিবিরের হামলা, নারী কর্মীদের লাঞ্ছনার অভিযোগ
চট্টগ্রাম, ব্যুরো :
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট আয়োজিত শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে জামায়াত-শিবিরপন্থী একটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। হামলায় অন্তত ১৫ জন আহত হন। গুরুতর আহত তিনজন বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তারা।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি রিপা মজুমদার, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত বিশ্বাস এবং অর্থ সম্পাদক সুদীপ্ত গুহ। অভিযোগ রয়েছে, হামলাকারীরা ব্যানার ছিঁড়ে পুড়িয়ে দেন, নারী কর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি এ্যনি চৌধুরীর দাবি, “সমাবেশ শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে, পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতেই জামায়াত-শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা আমাদের ওপর হামলা চালায়।”
হামলাকারীদের মধ্যে ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্রকাশনা সম্পাদক আবরার হোসাইন রিয়াদ, জামায়াত নেতা আকাশ চৌধুরী ও আরও কয়েকজনের জড়িত থাকার কথা অভিযোগে বলা হয়েছে।
নেতাদের অভিযোগ, নারী কর্মীদের হাসপাতালে নেওয়ার সময় পর্যন্ত কয়েক দফায় হামলা ও গালাগালের ঘটনা ঘটে। একাধিক নারী কর্মী শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। “এতটা বর্বরতা আমরা কখনো দেখিনি,” বলেন এক নেত্রী।
হামলার দিন গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখাও এটিএম আজহারুল ইসলামের দায়মুক্তির প্রতিবাদে মিছিল করে। সেই কর্মসূচিতেও ছাত্র শিবির হামলা চালায় বলে দাবি সংগঠনের।
প্রসঙ্গত, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের রিভিউ শুনানিতে খালাস দেওয়া হয়। এই রায়কে ‘রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত’ আখ্যা দিয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট বলেছে, “আদালতের নিরপেক্ষতা এ রায়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে এই রায় জাতীয় বিশ্বাসঘাতকতার নামান্তর। বিচারিক প্রক্রিয়ায় ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’কে উপেক্ষা করে সরকার জামায়াতপন্থী আইনজীবীদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে, যা বিচার ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষুণ্ণ করেছে।”
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট তাদের তিন দফা দাবি উত্থাপন করেছে:
১. চট্টগ্রামে সমাবেশে হামলাকারী ছাত্র শিবির ক্যাডারদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনতে হবে।২. নারী কর্মীদের ওপর হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।৩. এটিএম আজহারের দায়মুক্তির রায় পুনর্বিবেচনায় সর্বোচ্চ আইনগত উদ্যোগ নিতে হবে।