জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম শুধু পরাধীনতার কবি নন, তিনি স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা। তাঁর সাহিত্য ও সংগীত মানুষকে শোষণ-বঞ্চনার শৃঙ্খল ভাঙতে অনুপ্রাণিত করেছে। বিদ্রোহী, আনন্দময়ীর আগমন কিংবা অগ্নিবীনা— সবই ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে শোষণবিরোধী বাণীর মশাল হিসেবে কাজ করেছে।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের কাজির দেউরির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ৩১তম ক্লাবে জাতীয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নজরুল ইসলাম মঞ্চ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ফরিদা করিম এবং সঞ্চালনা করেন সাজ্জাদ উদ্দিন। আলোচনায় অংশ নেন নজরুল বিষয়ক সরকারি কমিটির সদস্য প্রফেসর আলমগীর মোহাম্মদ, সাংবাদিক ওসমান জাহাঙ্গীর, এম.আর. মিল্টন, গীতিকার আবুল কালাম আজাদ, লোকমান চৌধুরী রাসু, লায়ন ফারুক আহমেদ, মোসলেম, আবদুল আলীম, মহিউদ্দিন কাদের, ড. মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, লায়ন উজ্জ্বল বড়ুয়া, এম.এ. সবুর, সরোয়ার আমিন বাবু, মোক্তার উদ্দিন ও আ.ফ.ম. বোরহান।
বক্তারা বলেন, এক শতাব্দী আগে নজরুলের কবিতা-গান মানুষকে জাগ্রত করেছিল, আজও তাঁর চেতনা নাগরিক স্বাধীনতার পথ দেখায়। আলোচনায় কবির সৈনিক জীবনের উল্লেখযোগ্য অধ্যায়ও উঠে আসে।
১৯১৭ সালে শিয়ারশোল স্কুল থেকে দশম শ্রেণির প্রি-টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার পর নজরুল ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম, নওশেরা ও করাচি সেনানিবাসে প্রায় আড়াই বছর কাটান। সেখানেই কর্পোরাল থেকে কোয়ার্টার মাস্টার হাবিলদার পদে উন্নীত হন। করাচি সেনানিবাসে অবস্থানকালে তিনি ফার্সি ভাষা শেখেন এবং সাহিত্যচর্চা ও সংগীতে মনোনিবেশ করেন। এ সময় তিনি বাউণ্ডুলের আত্মকাহিনী (প্রথম গদ্য রচনা), কবিতা মুক্তি (প্রথম প্রকাশিত), গল্প হেনা, ব্যথার দান, মেহের নেগার, ঘুমের ঘোরে এবং কবিতা সমাধি রচনা করেন। পাশাপাশি কলকাতার প্রবাসী, ভারতবর্ষ, ভারতী, মানসী, সবুজপত্র, সওগাত প্রভৃতি সাহিত্যপত্রিকা নিয়মিত পাঠ করতেন।
যুদ্ধোত্তর ১৯২০ সালে সেনাবাহিনী থেকে বিদায় নিয়ে নজরুল সাহিত্য ও সংগীতে সম্পূর্ণভাবে মনোনিবেশ করেন এবং দ্রুতই হয়ে ওঠেন বিদ্রোহের কবি।
বক্তারা আরও বলেন, আজকের বাংলাদেশে নজরুলচর্চা যত গভীর হবে, ততই নাগরিক স্বাধীনতার চেতনা শক্ত ভিত্তি লাভ করবে।প্রেস বিজ্ঞপ্তি