আজকের প্রজন্মই আগামীর বাংলাদেশ গড়ার কারিগর—তাই তাদের মধ্যে নিরাপদ খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা সময়ের দাবি। বক্তারা বলেছেন, “একজন মানুষকে গুলি করে মারা একবারের ঘটনা, কিন্তু খাদ্যে ভেজাল মিশিয়ে মানুষকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া আরও ভয়াবহ অপরাধ।” তারা মনে করেন, খাদ্যে ভেজাল রোধ না হলে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম জাতি গঠন সম্ভব নয়।
১০ নভেম্বর ২০২৫, নগরীর সিডিএ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় “নিরাপদ খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার বিষয়ক জনসচেতনতামূলক প্রচারণা কর্মসূচি”। অনুষ্ঠানে জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা ফারহানুল ইসলাম নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রানা দেব নাথ ভোক্তা অধিকার বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক মোঃ সেলিম জাহাঙ্গীর ও ক্যাব বিভাগীয় সংগঠক রাসেল উদ্দীন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস. এম. নাজের হোসাইন, সিডিএ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবু হেনা মোস্তফা কামাল, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, ক্যাব দক্ষিণ জেলার সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মোঃ জানে আলম, সিভাসুর ফুড সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফা খাতুন, এবং ক্যাব যুব গ্রুপের সদস্য আবরার করিম নেহাল, সিদরাতুল মুনতাহা, সালমান রশিদ অভি প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, দেশে এখন ব্যবসায়ীরা অতি-মুনাফার নেশায় অন্ধ হয়ে পড়েছে। পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, আলু প্রভৃতি পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করা নিয়মে পরিণত হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও অনেক ক্ষেত্রে অসহায়। অন্যদিকে বেসরকারি মোবাইল অপারেটর, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, গণপরিবহনসহ নানা খাতে অনিয়ম থাকলেও গণমাধ্যমে এসব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা যায় না—বিজ্ঞাপনের চাপে তারা নীরব থাকে। ফলে সাধারণ মানুষের কষ্ট বেড়েই চলেছে, আর একটি প্রভাবশালী চক্র এই দুরবস্থা ব্যবহার করে বিদেশে অর্থ পাচার করছে ও নির্বাচনের সময় নিজেদের ‘জনদরদী’ হিসেবে উপস্থাপন করছে।
বক্তারা আরও বলেন, চট্টগ্রাম শহরের অনেক নামী-দামী রেস্তোরাঁ, মিষ্টির দোকান ও বেকারিতে যখনই নিরাপদ খাদ্য বা ভোক্তা অধিকার অভিযান পরিচালনা করা হয়, তখনই চাঞ্চল্যকর অনিয়ম ধরা পড়ে। তাদের মতে, এসব অপরাধের বিরুদ্ধে আরও কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া এবং তরুণ প্রজন্মকে ভোক্তা অধিকারের আন্দোলনে সম্পৃক্ত করা এখন সময়ের দাবি।





