- গুম বিরোধী আন্তর্জাতিক সপ্তাহ উপলক্ষে মায়ের ডাক ও এইচআরডি নেটওয়ার্ক এর মানববন্ধনগুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও হেফাজতে নির্যাতনসহ সকল রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন বন্ধ করে,গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবী জানান, প্রধান অতিথি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল পূর্বাঞ্চল-৩ এর সদস্য সচিব এড. আমীর আব্বাস।
গত ২৮ মে শনিবার সকাল সাড়ে দশটায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এইচআরডি নেটওয়ার্ক যুগ্ম-সম্পাদক আবদুল্লাহ মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সাংবাদিক কামরুল হুদা, মোঃ মুজিবুল্লাহ তুষার, ইব্রাহিম বিন তাহের, পারভীন আকতার চৌধুরী, মানবাধিকারকর্মী মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম,ওচমান জাহাঙ্গীর,লেখক- সংগঠক অভিলাষ মাহমুদ, সংগঠক সজল দাশ,প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল, , গীতিকা গাইন, কোহিনুর আকতার, গুমের শিকার জাহেদ হাসানের এর মা হোসনে আরা বেগম, বলি মনসুরের পরিবারের পক্ষে আবদুর রহিম, শামীম সর্দার এর পরিবারের পক্ষে মোহাম্মদ আলমগীর, বাঁচা চেয়ারম্যান এর পরিবারের পক্ষে আবুল কাসেম।১৯৮১ সালে গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের নিয়ে গড়ে ওঠা ফেডারেশন অফ অ্যাসোসিয়েসন ফর রিলেটিভস অফ দি ডিটেইল্ড ডিসএ্যাপিয়ার্ড ( FEDEFAM ) নামের দক্ষিণ আমেরিকার সংগঠন দিবসটি পালন করা শুরু করে । গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে গণমানুষের সংগঠনগুলো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সপ্তাহটি পালন করে আসছে । ল্যাটিন আমেরিকার বহু দেশে স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের অধীনে অনেকেই গুম হয়েছিলেন । সপ্তাহটি পালনের উদ্দেশ্য ছিল গুমের বিরুদ্ধে চলমান প্রচারণাকে বেগবান করা।
মানববন্ধনে গুমের শিকার ব্যক্তিদের তাঁদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য দাবি জানানো হয় । এনকাউন্টার ‘ বা ‘ ক্রসফায়ারের’নামে দেশের নাগরিকদের বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হেফাজতে নির্যাতন করে হত্যাসহ সমস্ত ধরণের রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন বন্ধের জন্য দাবি জানানো হয় । গুমের পাশাপাশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড , বিনাবিচারে আটক , স্বাধীন মতপ্রকাশে বাঁধা ও হেফাজতে নির্যাতন করে হত্যা । রাষ্ট্র কর্তৃক দায়মুক্তির সুযোগে গুম , বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও হেফাজতে নির্যাতন করে হত্যার ঘটনাগুলো ঘটেই চলেছে । গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিরাও নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন । এছাড়াও গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্ত্রী – সন্তানরা আর্থিক ও সামাজিকভাবে তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন । রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের চরম বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক গুম , নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূতভাবে মানুষ হত্যা করা । নিপীড়নকারী রাষ্ট্র শুধু গুম বা ক্রসফায়ারের মতো ঘটনাই ঘটায় না , সমাজের প্রত্যেক ক্ষেত্রে ভিন্নমতকে দমন করে । তাই জনগনের জন্য একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং সব ধরনের অন্যায় – অবিচারের প্রতিকার করতে ভিকটিমের পরিবারগুলোকে সঙ্গে নিয়ে জনগণকে মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোনো পথই খোলা নেই।
উল্লেখ্য মে মাসের শেষ সপ্তাহে গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠিত সংগঠনগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গুমের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সপ্তাহ পালন করা হয়।